পুরো লেখাটির জন্য আমরা সবাই মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ সাবধান !!! ঘটনা ২৯/০৩/২০১৬ তারিখের; বিকেল ০৪:১৫ মিনিট!!!
০১৭৮৬৫৮৬৭১৫ নাম্বারটি থেকে আমার জিপি নাম্বারে ফোন আসে। কল প্রদানকারী নিজেকে জিপির কাষ্টমার ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেয় এবং বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে আমার সিমটি নিবন্ধিত হয়েছে কিনা জানতে চায়। আমার হ্যাঁ সূচক উত্তর পাওয়ার পর বললো- আমরা গ্রামীনফোন থেকে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে নিবন্ধিত সিমগুলোকে ভেরিফাই করার জন্য এই ফোন কলটি করেছি।
আমরা আপনাকে এসএমএসের মাধ্যমে একটা গোপন নাম্বার পাঠাবো এবং পরক্ষণেই আপনাকে আবার ফোন দিব এবং ভেরিফিকেশনের জন্য আপনি ঐ গোপন নাম্বারটি আমাদের বলবেন….. বিষয়টি আমার কাছে একটু খটকা লাগলো!!! আমি শুনে বললাম, নিবন্ধনের সময় আমাকে তো কাষ্টমার সেন্টার থেকে বলা হলো যে আপনার সিমটি নিবন্ধনের সমস্ত কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এবং সাথে সাথেই এসএমএসের মাধ্যমে আমাকে কনফার্ম করেছিল।
তাহলে আবার কেন এই ভেরিফিকেশন?? তাছাড়া, আপনি আমাকে জিপির ভেরিফায়েড নাম্বার ১২১ থেকে ফোন না দিয়ে এই নাম্বার থেকে কেন দিয়েছেন?? আর আপনার কথা বলার স্টাইলে মনে হচ্ছে না আপনি জিপির কাষ্টমার ম্যানেজার!!! বেচারা, আমার প্রশ্নগুলোর সদুত্তর দিতে না পারায় আমি বিরক্ত হয়েই কলটি কেটে দেই। মনের সন্দেহ দূর করার জন্য নিজেই ১২১ এ ফোন করে এমন ভেরিফিকেশনের সত্যতা জানতে চাই। জবাবে কাষ্টমার ম্যানেজার জানালেন যে,
[বায়োমেট্রিক্স নিবন্ধনের জন্য জিপির পক্ষ থেকে কোন ভেরিফিকেশন কল করা হচ্ছে না!
# বিষয়টি_সম্পূর্ণ_প্রতারনামূলক ! তাছাড়া, জিপির পক্ষ থেকে ১২১ ভিন্ন অন্য কোন নাম্বার থেকে কথা বলার জন্য ফোন করা হয় না!!! এবং আমারমত আরও একজনের কাছ থেকে নাকি একই অভিযোগ তারা আজই পেয়েছেন এবং বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন। আমিও তাকে জিপির পক্ষ থেকে এসএমএস/ফোন কলের দ্বারা সবাইকে এসব প্রতারনার ফাঁদে না পরার জন্য সতর্কতামুলক ক্যাম্পেইন শুরুর অনুরোধ জানিয়ে লাইনটা কেটে দিলাম!!!]
# এবার_আসল_রহস্যে_আসি ! উপরের ঘটনাটা শুনে সাধারন মনে হলেও এর ইফেক্ট অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে! যারা ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করেছেন তারা হয়তো জানেন যে, নিবন্ধনের সময় জিপি থেকে একটা ৪ ডিজিটের গোপন নাম্বারের ম্যাসেজ আসে যেটা ঐ ম্যানেজারকে বলতে হয়। নাম্বারটি মিলে গেলে ঐ কর্মকর্তা বায়োমেট্রিক্স ছাপ নিয়ে নিবন্ধন প্রসেস শেষ করে। এবং প্রায় সাথে সাথেই এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধনকরন নিশ্চিত করা হয়। এখন, ঐ কল দাতাও কিন্তু আমাকে জিপির ভেরিফায়েড নাম্বার থেকেই গোপন কোডটি পাঠাবে বলেছিল। আমি তাকে জিপির কেউ না বলায় আমাকে বলেছিলেন যে এসএমএসটা জিপির ভেরিফায়েড নাম্বার থেকেই করা হবে, টেনশন করবেন না! কিন্তু আমাকে তিনি সন্তুষ্ট করতে পারেন নি! তাই হয়তো এ যাত্রায় বেঁচে গেছি!
পুরো বিষয়টা নিয়ে আমার নিম্নোক্ত পর্যালোচনাগুলো হয়তো কারও উপকারে আসতে পারে…. ঐ প্রতারক চক্রটি নিশ্চিতভাবেই জিপির সিস্টেম হ্যাক করে ঐ ভেরিফায়েড নাম্বার থেকে গোপন নাম্বার সম্বলিত এসএমএস পাঠাতে সক্ষম। এরপর ফিরতি কলের দ্বারা গোপন নাম্বারটা জেনে নিয়ে জিপির ডেটাবেইজ থেকে ঐ সিমের গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের একসেস্ পাবে। অন্যসব তথ্যর ন্যায় আপনার মহামূল্যবান ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ ঐ ডেটাবেইজেই সংরক্ষিত আছে যাকে আমরা বায়োমেট্রিক্স বলে থাকি। আমারমতে এটাই ওদের আসল টার্গেট। আর আপনার বা আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ওদেরমত চক্রের হাতে একবার গেলে কতটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে যারা প্রযুক্তি সম্পর্কে একটু খোঁজখবর রাখেন তারা খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন! এক কথায়, দুনিয়ার যে কোন প্রান্তেই যেকোন স্ক্যান্ডেলে আপনি ফেঁসে যেতে পারেন!!!
সোজা বাংলায়, আপনি তখন নিশ্চিতভাবেই দুনিয়ার সবচাইতে অনিরাপদ ব্যক্তি হয়ে যাবেন…..!!! সুতরাং, এমন পরিস্থিতির শিকার হবার আগেই নিজে সচেতন হোন,
কাছের মানুষদের ও সচেতন করুন। লেখাটা অনেক লম্বা হয়ে গিয়েছে জানি কিন্তু যদি একজনও এর দ্বারা উপকৃত হয় এই ভেবেই শেয়ার করা। তবে যদি ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে কারও কোন সন্দেহ হয় তবে ১২১ এ ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন।
সময় দিয়ে লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন, সবসময়।
0 comments:
Post a Comment